দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দলটির এই শীর্ষ নেতা বেশকিছু পদক্ষেপও নিয়েছেন। তারেক রহমান কতটা কঠোর তা স্পষ্ট করতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদকে শোকজ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে দলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। তারেক রহমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সালাহউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটি বিলুপ্ত করাসহ স্থানীয় তিন নেতার প্রাথমিকসহ সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর এ পর্যন্ত সারাদেশে দেড় শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার এবং অসংখ্য নেতাকে শোকজ করা হয়েছে।
সম্প্রতি দলীয় এক কর্মসূচিতে তারেক রহমান তার কঠোর মনোভাবের কথা জানান। তিনি বলেন, আপনারা পরাজিত অপশক্তির পাতা ফাঁদে পা দেবেন না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে চূড়ান্ত সফলতায় নিতে হলে কেউ দখলদারি কাজে লিপ্ত হবেন না, সহায়তাও করবেন না। কেউ আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবেন না।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৫ সালের ১০ মে রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি ভবন থেকে তাকে গুম করা হয়। ৩২ দিন পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরের গলফ কোর্স ময়দান থেকে উদ্ধার হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ৯ বছর পর সম্প্রতি দেশে ফেরেন তিনি।
এস আলমের গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারে নিজ নির্বাচনী এলাকায় সংবর্ধনা নিতে যান সালাহউদ্দিন। এই নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হলে তাকে শোকজ করেন তারেক রহমান।
সূত্র মতে, গত রবিবার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেন তারেক রহমান। সেখানেই এস আলমের গাড়িতে চড়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। তারেক রহমানের নির্দেশে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ সংক্রান্ত চিঠি তার কাছে পাঠিয়ে দেন। চিঠিতে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিন্ন ঘটনা-বিতর্কিত একজন ব্যবসায়ী সঙ্গে বৈঠক করায় শোকজ করা হয়েছে ডাকসুর সাবেক জিএস এবং বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকেও।
এ নিয়ে দলের কোনো নেতাই বক্তব্য দিতে রাজি হননি। নাম প্রকাশ না করে দলের গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা আমাদের সময়কে বলেন, এই মুহূর্তে দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে কত বড় নেতা বা কতটা ঘনিষ্ঠ- বিষয়টি দেখা হচ্ছে না। দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, অনেকেরই ধারণা তারেক রহমানের সঙ্গে এস আলমের সম্পর্ক আছে। সালাহউদ্দিনকে শোকজ করার মধ্য দিয়ে সেই ধারণারও অবসান ঘটল। এর মধ্য দিয়ে দলের নেতাদের কাছে বড় বার্তাও গেল।